AbulKalam

@abulkalamsomrat

BASIC member 0 karma
প্রথম লড়াইয়ের রোমা

প্রথম লড়াইয়ের রোমাঞ্চে ‘জ্যোতি-অ্যালিসা’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা, যারা কিনা ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম সেরা দল। হয়তো সেই কারণেই বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির অন্যরকম উদ্দীপনা, আবেগ। অজি নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে লড়াই। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎও। আর ঘরের মাঠ বলে টাইগ্রেস অধিনায়কের আত্মবিশ্বাসটাও প্রবল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি জানেন দুই দলের মধ্যে পার্থক্য কতটা। কিন্তু লড়াইটা  যে হবে বাংলাদেশের মাটিতে। তাই সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রতিপক্ষের প্রতি সমীহ দেখাতে কোনও কার্পণ্য করেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। ম্যাচের আগে দুই অধিনায়কের কন্ঠেই প্রথম লড়াইরে রোমাঞ্চ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো করতে পারলে আরও বেশি হাইলাইট হবো। তারা যেভাবে ফেসিলিটিজগুলো পায় সেটা মেনস-ওমেনস দলে কোনও বিভেদ নেই। আমাদের আছে, তবুও বলবো আমরা ভালো করছি, বিসিবিও চেষ্টা করছে। প্রথমবারের মতো আমাদের একটা স্পন্সর এসেছে। এটা খুবই ভালো সাইন যে এখন মানুষ আমাদেরকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমি আমার দলের ওপর আস্থা রাখছি। আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সঠিকভাবে যেতে হবে। সিরিজে ইতিবাচক ফলাফল আনতে হবে।’ অন্যদিকে অজি অধিনায়ক বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম লড়াই হলেও নিজেদের এগিয়ে রাখতে নারাজ। তার কথাতে স্পষ্ট যে প্রতিপক্ষ নিয়ে ভালো হোম ওয়ার্ক করা হয়েছে মাঠে নামার আগে। তাই চ্যালেঞ্জটা কোথায় সেটি জানিয়ে দিলেন স্পষ্ট করেই। অ্যালিসা হিলি বলেন. ‘আপনি যদি তাদের স্কোয়াডের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন তাদের দলে অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বোলিং রয়েছে। আমার মনে হয় যথেষ্ট স্পিন রয়েছে যেটা আলাদাভাবে নোট করার মতো। অবশ্যই উপহামহাদেশের বাইরের দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এধরনের কন্ডিশনে এসে ভালো করা। নির্দিষ্টভাবে কারো নাম বলতে চাই না কিন্তু তাদের বোলিং তাদের বড় শক্তি। ভারতের বিপক্ষে তাদের সর্বশেষ সিরিজের কিছুটা পর্যবেক্ষণ করেছি, তারা এই কন্ডিশনে ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিং লাইনআপকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছিল। তাই একটা ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমাদের প্রতি আক্রমণ করতে হবে এবং কন্ডিশনের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’  অ্যালিসা অকপটে জানালেন বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার উচ্ছ্বাসের কথাও।  তিনি বলেন, ‘আমি উচ্ছ্বসিত এবং আমি জানি আমরা অনেক খেলি ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের মতো দলগুলোর বিপক্ষে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সুযোগ খুবই কম পাই। দল হিসেবে নতুন কন্ডিশনে নতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের দলের জন্য এবং আমরা সেটা নিতে প্রস্তুত।’ ঘরের মাঠে এ বছর সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে সিরিজ খেলতে পারাটা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি উপকার হতে পারে। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দুই সিরিজ থেকেই বিশ্বকাপের আগে নিজেদের প্রস্তুত করার রসদ খুঁজে পেতে পারে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে বেশ ভালো করছে। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও ওয়ানডে সিরিজ ঠিকই ড্র করে টাইগাররা। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে তো দুটি সিরিজই জেতে জ্যোতির দল। এর মধ্যে ওয়ানডে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে জয় পায় বাংলাদেশ। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দুই সংস্করণেই প্রথম জয় পায় তারা। বড় দলের বিপক্ষে ভালো করলে বিশ্ব ক্রিকেটেও আলোচনায় থাকা যায়। জ্যোতি বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ভালো করলে বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক বেশি ফোকাসড হওয়া যায়। গত সিরিজে এখানে প্রশ্ন ছিল জিততে পারবো কিনা বা কি হতে পারে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে জিতলে আরও ভালো হবে কিনা। এটাও কিন্তু নারী দলের একপ্রকার সাফল্য।’সিরিজটি নারী ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। ১৫ ম্যাচে ১০ জয় নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।  সমান ম্যাচে ৪ জয় পাওয়া বাংলাদেশ আছে ৭ নম্বরে। ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হওয়ায় দুই দলের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে এই সিরিজ। শক্তিমত্তায় দুই দলের পার্থক্য আকাশ-পাতালের। যেখানে অজি নারী দলের সাফল্য চূড়ায় সেখানে বাংলাদেশ এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাঁটি হাঁটি পা পা করছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘তারা বেটার সাইড এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে খেলা আমাদের জন্য বড় একটা অভিজ্ঞতা দলের জন্য। আমরাও যেভাবে খেলে আসছি গত ৬/৭ মাস ক্রিকেট খেলছি তারা অবশ্যই আমাদের হালকাভাবে নেয়নি, সেটা বোঝা যায় তাদের স্কোয়াড দেখে এবং বিশ্বকাপও এখানে। তো সবকিছু মিলিয়ে অবশ্যই যতগুলো সিরিজ খেলছি, ইন্ডিয়া বলেন পাকিস্তান, সাউথ আফ্রিকা তারা বেটার সাইড।’এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। দুটি ম্যাচেই স্বাভাবিকভাবে অজিরা জিতেছে। আর ওয়ানডেতে আজই প্রথমবার অজি নারীদের বিপক্ষে মাঠে নামছে টাইগ্রেসরা। টি-টোয়েন্টি দুটিও ছিল ২০২০ ও ২০২৩ বিশ্বকাপের। এই সিরিজে ১৫ বছর বয়সী নিশিতা আক্তার হতে পারেন বাংলাদেশের ট্রাম্প কার্ড। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ২ ম্যাচে ২ উইকেট নিলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় দারুণ বোলিং করেছেন তিনি। গতকাল সংবাদ সম্মেলনেও নিশিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন অধিনায়ক জ্যোতি। এছাড়া এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হতে পারে উইকেটরক্ষক ব্যাটার ফারজানা আক্তারের। 
Loading comments...